সাজিদ ভাই । ৩০তম বিসিএসে কোন রকম কষ্ট পেরেশানী ছাড়াই ডাক্তারী কোটায়
হয়ে গেলো। হবে না কেনো বলেন ? অন্যদের যেখানে ৮০+ মার্ক পেয়ে প্রিলি পাস
করতে হয় সেখানে ডাক্তারদের ৬৫+ থাকলেই পাশ। লিখিত আর ভাইবা সন্তোষজনকভাবে
চালাতে পারলেই খেইল খতম। তারপর ট্রেনিং শুরু । ছাড় দিবেই বা না কেনো ? যে
পরিমাণ লড়াই করে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় টিকতে হয় সেটা কি ভেবে দেখেছি কোন
সময় ?
গেট রেডি ফর জয়েন।
ঢামেকহা (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) হতে পড়াশোনা, নগরকেন্দ্রিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত গ্রামে গিয়ে মন টিকাতে পারবে তো ছেলেটা ? খাবে কি , থাকবে কোথায় মায়ের মনে রাজ্যের প্রশ্ন ।
কয়েকটা দিনই তো । প্রাথমিক পর্যায়ে বাধ্যতামূলক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করতে হয়। তারপর না হয় ওর বাবাকে বলে কয়ে ঢাকায় পোষ্টিং এর ব্যবস্থাটা করে দেওয়া যাবে।
কি জানি কি হয় !! আল্লাহই ভালো জানেন।
নির্দিষ্ট দিনে কাজে যোগদান করলো সাজিদ। উদ্যমী মন । সুঠাম দেহ। মানব সেবার ব্রত নিয়েই তো ছিলো ল্যাব, ক্লাস, প্রাকটিকাল, এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন।
প্রথম প্রফ থেকে শুরু করে ফোর্থ প্রফ পর্যন্ত মনযোগীতার সর্বোচ্চ ঢেলে দিতে হয়।
জীবন মরণের প্রশ্নে কোনভাবেই অমনযোগী হওয়া চলে না।
আনুষ্ঠানিক জটিলতা শেষ করে স্বপ্নের কাজে যোগদান করলো সাজিদ ।
“উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা” গ্রামের মানুষগুলির নির্ভরতার প্রতীক সরকারি হাসপাতালের সরকারের প্রথম শ্রেণীর চাকুরে।
“ডাক্তার সাবরা কত কষ্ট করে গেরামে থাহে, তারারে সম্মান জানানো উচিত, সুখে-দুঃখে খোঁজ খবর রাখা উচিত। ”- সহজ সরল গ্রামের মানুষগুলোর মনের কথাই যেন এমনটা।
কর্ম ব্যস্ততায় দিন কাটে সাজিদের । এইতো পেশেন্ট দেখা, সার্জারীর কাজ থাকলে তাও দেখতে হয়। রোগীদের ঢাকায় পাঠানোর দায়িত্ব নানামুখী ব্যস্ততায়।
বাব মাকেও মনে করে ।
হ্যালো মা, কেমন আছেন ?
আবার প্রিয়ার জন্য আছে পিছুটান।
এইতো আর কয়েকটা দিন। ঢাকায় এসেই তোমাকে ঘরে তুলবো । রাগ করো না প্লিজ !!
---------
থাকো তোমার ডাকটারী নিয়া .......টুৎ......টুৎ.......টুৎ
----------
উপজেলাতেই বাহার সাহেবের একটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার । রমরমা ব্যবসা । বাহার সাহেবের খুব সু-অভ্যাস তিনি মানুষকে আপন করে নিতে পারেন। আস্থার জায়গাতে তিনি স্থান করে নেন অতি সহজেই। বিশেষতঃ উপজেলাতে কর্মরত ডাক্তারদের সাথে। হাসপাতালের সহযোগীরা সাজিদকে বাহার সাহেব সম্পর্কে কমবেশী ধারণা দিলেও সাজিদ বাহার সাহেবকে ভালো বলেই জানেন। দিনকে দিন বাহার সাহেব সাজিদ এর ঘনিষ্ট থেকে ঘনিষ্টতমই হচ্ছেন। ডিউটি শেষে মোটর সাইকেল নিয়ে বের হয় আর আসার কোন নাম গন্ধ থাকে না।
নানা ধরনের মানুষ এর সাথে জলচল বাহার সাহেবের । সাজিদও মিশতে শুরু করেছে নানামুখী মানুষের সাথে।
আরে ডাক্তার সাহেব জীবনটাকে উপভোগ করেন । বুঝলেন এটা খেয়ে দেখেন না একবার। একদম অন্য রকম লাগবে !! অন্য রকম টেস ।
খেই হারিয়ে যাওয়া একটি সম্ভাবনা।
কতগুলো স্বপ্নের অপমৃত্যু ।
দিনকে দিন অভ্যস্ত হওয়া নানা ধরণের আসক্তির সাথে।
শরীরের মধ্যে তেমন তেজদীপ্ততা নেই , কর্মে নেই চাঞ্চল্য।
শুধু অস্থির অস্থির লাগে ।
সময়: রাত বারোটা।
নাইট শিফ্ট সাজিদ এর । ডক্টরস রুমে সাজিদ আছে তার কাজ নিয়ে।
বিষ খাওয়া রোগী আনা হলো সিএনজিতে করে । রোগীর পাশে থাকা স্বজনরা হাসপাতালের করিডোরে নেমেই চিৎকার শুরু করলো ডাক্তার ডাক্তার বলে।
নার্সরা রোগীকে বেডে শুইয়ে ডাকতে গেলো ডাক্তারকে।
আমাদেরকে ইংরেজীতে বাক্য গঠন (কাল অধ্যায়ে) পড়াতো ইংরেজীর শিক্ষকরা।
ডাক্তার আসিবার পূর্বেই রোগী মারা গেলা ।
আজ নতুন একটা বাক্য শুনুন।
“রোগী আসিবার পূর্বেই ডাক্তার মারা গেলো ”
জ্বি, এটাই সত্য । অনেক ডাকাডাকির পরও সাজিদ জাগ্রত হলো না। সকালে এ্যাম্বুলেন্স করে আইনি জটিলতা, সরকারি কাগজপত্রাদি ঠিক করে সাজিদের বাবা লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকায় আনলেন। বাকিটা
বিশেষ দ্রষ্টব্যতে কি সৎসঙ্গের উপর কিছু বলা প্রয়োজন ছিলো ?
{ বলে রাখা ভালো: ঘটনার কেন্দ্রীয় চরিত্র আমার নিজ উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছিলেন। অসূস্থতার খাতিরে হাসপাতালে গিয়েছিলাম দুয়েকবার যতটুক বাতচিৎ হয়েছিলো তাঁকে আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা উনার ভুল ত্রুটিকে মাফ করে দেন। }
গেট রেডি ফর জয়েন।
ঢামেকহা (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) হতে পড়াশোনা, নগরকেন্দ্রিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত গ্রামে গিয়ে মন টিকাতে পারবে তো ছেলেটা ? খাবে কি , থাকবে কোথায় মায়ের মনে রাজ্যের প্রশ্ন ।
কয়েকটা দিনই তো । প্রাথমিক পর্যায়ে বাধ্যতামূলক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করতে হয়। তারপর না হয় ওর বাবাকে বলে কয়ে ঢাকায় পোষ্টিং এর ব্যবস্থাটা করে দেওয়া যাবে।
কি জানি কি হয় !! আল্লাহই ভালো জানেন।
নির্দিষ্ট দিনে কাজে যোগদান করলো সাজিদ। উদ্যমী মন । সুঠাম দেহ। মানব সেবার ব্রত নিয়েই তো ছিলো ল্যাব, ক্লাস, প্রাকটিকাল, এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন।
প্রথম প্রফ থেকে শুরু করে ফোর্থ প্রফ পর্যন্ত মনযোগীতার সর্বোচ্চ ঢেলে দিতে হয়।
জীবন মরণের প্রশ্নে কোনভাবেই অমনযোগী হওয়া চলে না।
আনুষ্ঠানিক জটিলতা শেষ করে স্বপ্নের কাজে যোগদান করলো সাজিদ ।
“উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা” গ্রামের মানুষগুলির নির্ভরতার প্রতীক সরকারি হাসপাতালের সরকারের প্রথম শ্রেণীর চাকুরে।
“ডাক্তার সাবরা কত কষ্ট করে গেরামে থাহে, তারারে সম্মান জানানো উচিত, সুখে-দুঃখে খোঁজ খবর রাখা উচিত। ”- সহজ সরল গ্রামের মানুষগুলোর মনের কথাই যেন এমনটা।
কর্ম ব্যস্ততায় দিন কাটে সাজিদের । এইতো পেশেন্ট দেখা, সার্জারীর কাজ থাকলে তাও দেখতে হয়। রোগীদের ঢাকায় পাঠানোর দায়িত্ব নানামুখী ব্যস্ততায়।
বাব মাকেও মনে করে ।
হ্যালো মা, কেমন আছেন ?
আবার প্রিয়ার জন্য আছে পিছুটান।
এইতো আর কয়েকটা দিন। ঢাকায় এসেই তোমাকে ঘরে তুলবো । রাগ করো না প্লিজ !!
---------
থাকো তোমার ডাকটারী নিয়া .......টুৎ......টুৎ.......টুৎ
----------
উপজেলাতেই বাহার সাহেবের একটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার । রমরমা ব্যবসা । বাহার সাহেবের খুব সু-অভ্যাস তিনি মানুষকে আপন করে নিতে পারেন। আস্থার জায়গাতে তিনি স্থান করে নেন অতি সহজেই। বিশেষতঃ উপজেলাতে কর্মরত ডাক্তারদের সাথে। হাসপাতালের সহযোগীরা সাজিদকে বাহার সাহেব সম্পর্কে কমবেশী ধারণা দিলেও সাজিদ বাহার সাহেবকে ভালো বলেই জানেন। দিনকে দিন বাহার সাহেব সাজিদ এর ঘনিষ্ট থেকে ঘনিষ্টতমই হচ্ছেন। ডিউটি শেষে মোটর সাইকেল নিয়ে বের হয় আর আসার কোন নাম গন্ধ থাকে না।
নানা ধরনের মানুষ এর সাথে জলচল বাহার সাহেবের । সাজিদও মিশতে শুরু করেছে নানামুখী মানুষের সাথে।
আরে ডাক্তার সাহেব জীবনটাকে উপভোগ করেন । বুঝলেন এটা খেয়ে দেখেন না একবার। একদম অন্য রকম লাগবে !! অন্য রকম টেস ।
খেই হারিয়ে যাওয়া একটি সম্ভাবনা।
কতগুলো স্বপ্নের অপমৃত্যু ।
দিনকে দিন অভ্যস্ত হওয়া নানা ধরণের আসক্তির সাথে।
শরীরের মধ্যে তেমন তেজদীপ্ততা নেই , কর্মে নেই চাঞ্চল্য।
শুধু অস্থির অস্থির লাগে ।
সময়: রাত বারোটা।
নাইট শিফ্ট সাজিদ এর । ডক্টরস রুমে সাজিদ আছে তার কাজ নিয়ে।
বিষ খাওয়া রোগী আনা হলো সিএনজিতে করে । রোগীর পাশে থাকা স্বজনরা হাসপাতালের করিডোরে নেমেই চিৎকার শুরু করলো ডাক্তার ডাক্তার বলে।
নার্সরা রোগীকে বেডে শুইয়ে ডাকতে গেলো ডাক্তারকে।
আমাদেরকে ইংরেজীতে বাক্য গঠন (কাল অধ্যায়ে) পড়াতো ইংরেজীর শিক্ষকরা।
ডাক্তার আসিবার পূর্বেই রোগী মারা গেলা ।
আজ নতুন একটা বাক্য শুনুন।
“রোগী আসিবার পূর্বেই ডাক্তার মারা গেলো ”
জ্বি, এটাই সত্য । অনেক ডাকাডাকির পরও সাজিদ জাগ্রত হলো না। সকালে এ্যাম্বুলেন্স করে আইনি জটিলতা, সরকারি কাগজপত্রাদি ঠিক করে সাজিদের বাবা লাশ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকায় আনলেন। বাকিটা
বিশেষ দ্রষ্টব্যতে কি সৎসঙ্গের উপর কিছু বলা প্রয়োজন ছিলো ?
{ বলে রাখা ভালো: ঘটনার কেন্দ্রীয় চরিত্র আমার নিজ উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছিলেন। অসূস্থতার খাতিরে হাসপাতালে গিয়েছিলাম দুয়েকবার যতটুক বাতচিৎ হয়েছিলো তাঁকে আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা উনার ভুল ত্রুটিকে মাফ করে দেন। }
No comments:
Post a Comment